চুলের যত্নে কালোকেশী ব্যবহার

চুলের যত্নে কালোকেশী ব্যবহারের একটি প্রাকৃতিক সমাধান হলো চুল পড়া,খুশকি,অল্প দিনে চুল পাকা,চুলের রুক্ষতা দূর করতে সাহায্য করে। চুল মানুষের শুধু সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করে না তার আত্মবিশ্বাসকেও বৃদ্ধি করে। বর্তমান সময়ে কর্মব্যস্ততার কারণে ধুলো ময়লা, দূষণ,মানসিক চাপ হরমোনের সমস্যা ও অপুষ্টিকর খাবার এবং নষ্ট কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনে ব্যবহারের ফলে আমাদের চুল পড়া রুক্ষতা ও খুশকির মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় ভেষজ উপাদান দিয়ে তৈরি জিনিসগুলো দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সবগুলো ভেষজ উৎপাদন গুলোর মধ্যে অন্যতম এবং জনপ্রিয় হলো কালকেশী।

সূচিপত্রঃ চুলের যত্নে কালোকেশী ব্যবহার

  • কালোকেশী কি এবং এর গুরুত্ব ও বিশেষত্ব
  • কালকেশী ইতিহাস ও উৎপত্তিস্থান
  • চুলের যত্নে কালোকেশী ব্যবহারের উপকারিতা
  • কালোকেশী ব্যবহারে নিয়ম
  • ঘরোয়া উপায়ে কালোকেশী তৈরির নিয়ম
  • কি কি পুষ্টি গুণ ও ভেষজ বৈশিষ্ট্য রয়েছে কালোকেশীতে
  • কালোকেশী কার জন্য বেশি কার্যকর
  • কালোকেশী না কেমিক্যাল কোনটা আমাদের জন্য নিরাপদ
  • চুল পড়া রোধে কালোকেশী উপকারিতা
  • কালোকেশী সঙ্গে অন্যান্য ভেষজ উপাদান ব্যবহারের নিয়মাবলী
  • চুলের যত্নে কালোকেশী ব্যবহারে গবেষক ও বিশেষজ্ঞ মতামত
  • উপসংহার

কালকেশী কি এবং এর গুরুত্ব ও বিশেষত্ব

কালোকেশী মূলত একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার প্রাচীন নাম কালো তিল বা Black sesame। এটি বিভিন্ন উপমহাদেশে হারবাল মেডিসিন বা ইউনানী চিকিৎসা ব্যবহার করে আসছে।চুলের যত্নে কালোকেশী ব্যবহারের ফলে চুল হয় ঘন কালো এবং মজবুত করে তুলতে কালোকেশী গুরুত্ব-অরিসীম। কালোকেশী বা কালো তিলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন খনি জয়েন্ট অ্যাক্সিডেন্ট যে আমাদের মাথার চুলকে পুষ্টি যোগায় এবং গোড়া থেকে চুলকে মজবুত করে তোলে। আধুনিক যুগে আমরা অনেক ধরনের কেমিক্যাল যুক্ত প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে আমাদের চুলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে। এ সমস্ত সমস্যার সমাধানের জন্য আমি মনে করি কালোকেশী প্রাকৃতিকভাবে নিরাপদ। কালোকেশীর অনেকগুলো বিশেষত্ব রয়েছে যার মধ্যে অন্যতম হলো চুল কালো রাখা চুল পড়া বন্ধ করা মজবুত করা ও চুলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করা এছাড়াও চুলের কোমলতা ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।

কালোকেশী  ইতিহাস ও উৎপত্তিস্থান 

কালোকেশী ইতিহাস শত শত বছরের পুরনো আয়ুর্বেদ ও ইউনানী চিকিৎসায় ব্যবহার করা হতো।চুলের যত্নে  কালোকেশী ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কালো তিল বা কালোকেশী এটি মূলত একটি ভেষজ উদ্ভিদ।যা প্রাচীন আমল থেকেই আয়ুর্বেদ বা ইউনানী ঔষধ হিসেবে প্রাচীন চিকিৎসকরা বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করে আসছে। প্রাচীন আমলের চিকিৎসক ও বিভিন্ন ইতিহাস থেকে জানা যায় যে ভারতবর্ষ চীন বাংলাদেশ ও মধ্যপ্রাচ্যের কিছু প্রদেশে কালকেশী কে চুলের যত্ন, ক্ষতস্থান নিরাময় ও শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করা হতো। এছাড়াও প্রাচীন আমলে আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা কালোকেশী চুলের যত্নে অত্যন্ত কার্যকরী হওয়ায় এটাকে চুলের রক্ষাকবচ হিসেবে আখ্যায়িত করতেন।

কালোকেশীর উৎপত্তিস্থান

কালোকেশীর উৎপত্তিস্থান প্রধান ভারতীয় উপমহাদেশে এরপরে পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ নেপাল শ্রীলংকা এছাড়াও যেসব অঞ্চলে আবহাওয়া উষ্ণ আদ্রতা বিরাজ করে সে সমস্ত অঞ্চলেও এ উদ্ভিদ জন্মানো সম্ভব। এছাড়াও গ্রামের প্রান্তিক অঞ্চল ও বন জঙ্গলে এ উদ্ভিদ সহজে জন্মবিস্তার করতে সক্ষম হয়। বর্তমান সময়ে এটি শুধু এশিয়া মহাদেশে নয় বিশ্বের আরো অনেক দেশ রয়েছে যেমন আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকায় কিছু অংশে কালোকেশীর  চাষাবাদ করতে দেখা যায়। এবার আমরা জানবো বাংলাদেশে কোন কোন অঞ্চলে কালোকেশীর চাষাবাদ হয়।প্রথমত বরেন্দ্র অঞ্চল গুলোতে এর চাষাবাদ অধিক পরিমাণে দেখা যায় যেমন সিলেট, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি ও পাহাড়ি অঞ্চলে এগুলোর চাষাবাদ বেশি দেখা যায়। এছাড়াও ভারতের, কেরালা, তামিলনাড়ু অন্ধপ্রদেশ এ সমস্ত অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে কালোকেশী উৎপাদন করা হয়। এর পাশাপাশি উষ্ণ আদ্রতা এলাকায় এর বিস্তার দিন দিন বেড়েই চলছে।

চুলের যত্নে কালোকেশী ব্যবহারের উপকারিতা

চুলের যত্নে কালোকেশী ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও কালোকেশী থাকা প্রাকৃতিক উপাদান আমাদের ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং চুল পড়া থেকেও আমাদের রক্ষা করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ হেয়ার ফলিকলক এর মত শক্তিশালী উপাদান এটি ব্যবহারের ফলে চুলকে করে শক্তিশালী এবং মজবুত। এছাড়াও মাথা খুশকি ও মাথার ত্বককে সুস্থতা রাখতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও এন্টিফাংগাল এর গুণের কারণে খুশকি ও চুলকানির মত সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এবং চুলকে উজ্জ্বল ও মসৃণ করে ভাঙ্গা চুল ও রুক্ষতা কমায় চুলের ডগা ফাটা ও রুক্ষতা কমাতে কালোকেশী অত্যন্ত কার্যকরী ভাবে ভূমিকা পালন করে।কালোকেশীতে থাকা ভিটামিন ও মিনারেল চুলের ঘরে পুষ্টির যোগায়। এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে চুলের প্রাকৃতিক শাইন ফিরে আসে এবং চুল হয় ঝলমলে কালো ও উজ্জ্বল দেখায়।

কালোকেশী ব্যবহারের নিয়ম

চুলের যত্নে কালোকেশী ব্যবহার নিয়ম খুবই সহজ যে কেউ চাইলে ঘরে বসে নিয়ম গুলো অনুসরণ করে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে নিয়মিত ব্যবহার করলে এর উপকারিতা অনেক।কালোকেশী ব্যবহারের কিছু নিয়ম গুলো আমরা নিচে দেওয়া হল যেগুলো অনুসরণ করে আপনি নিজেই তৈরি করতে পারবেন চলুন আমরা জেনে নেই সে সমস্ত উপকরণ গুলো ও কিভাবে তৈরি করব।

প্রথমে আমরা জানবো তেল ব্যবহারের নিয়ম

  • এক কাপ নারিকেল বা তিলের তেল সেইসাথে এক মুঠো কালোকেশী তাজা পাতা দিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ফুটিয়ে নেন
  • পাতা কালো হয়ে গেলে তেল ছেঁকে ঠান্ডা করে বোতলে বা যে কোন পাত্র সংরক্ষণ করুন
  • সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন রাতে ঘুমানোর আগে মাথা হালকা গরম কালোকেশী তেল দিয়ে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন
  • সারারাত রেখে সকালে হারবাল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন

এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে চুল পড়া কমে যাবে চুলের গোড়া শক্ত ও মজবুত হবে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে।

কালোকেশী হেয়ার প্যাক ব্যবহারের নিয়ম

  • প্রথমে দুই টেবিল চামচ কালোকেশী পাউডারের সঙ্গে দুই টেবিল চামচ এলোভেরা জেল এবং এক টেবিল চামচ দই মিশিয়ে ভালোভাবে পেস্ট করে নিন
  • পরিষ্কার চুলের গোড়ায় থেকে ঢাকা পর্যন্ত একটি ভালোভাবে লাগিয়ে রাখুন
  • এরপর ৩০ থেকে ৪০ মিনিট অপেক্ষা করার পর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিন

এই প্যাকটি ব্যবহারের ফলে খুশকি দূর করে রুক্ষতা কমা এবং চুলে প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়

কালোকেশী শ্যাম্পু ব্যবহারের নিয়ম

  • এটা খুবই সহজ একটি মাধ্যম বাজারে পাওয়া হারবাল শ্যাম্পু সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করুন
  • মাথার চুলগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন এরপর ভেজা চুলে সরাসরি লাগিয়ে হালকা ভাবে মেসেজ করে কিছুক্ষণ পরে ধুয়ে ফেলুন
  • একটু ব্যবহারের ফলে মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখে খুশকি প্রতিরোধ করে এবং নতুন চুলের মসৃণতা তৈরি করে যার ফলে চুলকে দেখায় সিল্কি ও মসৃণ।

আপনারা চাইলে ঘরে বসে খুব সহজেই তৈরি করে কালোকেশী তেল, শ্যাম্পু ও হেয়ার প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করতে পারবেন।

ঘরোয়া উপায়ে কালোকেশী তৈরির নিয়ম

ঘরোয়া উপায়ে কালোকেশী তৈরির সহজ কিছু নিয়ম কানুন এই আর্টিকেল মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করব। যাতে করে আপনি ঘরে বসেই নিজে নিজেই কালোকেশী তেল বা হেয়ার প্যাক তৈরি করতে পারেন। চলুন আমরা জেনে নেই কিভাবে কালোকেশী তেল তৈরি করা যায় তার কিছু উপকরণ সম্বন্ধে।

প্রথমে আমরা জানবো উপকরণ সম্বন্ধে

  • শুকনো কালকেশী পাতা বা গুঁড়ো দুই টেবিল চামচ
  • নারিকেল তেল এক কাপ
  • মেথি দানা এক চা চামচ

প্রথমে নারিকেল তেল হালকা গরম করে নিন এরপর কালোকেশী পাতা বা গুঁড়ো মিশিয়ে দিন ১০থেকে ১৫ মিনিট হালকা আচেঁ নেড়েচেড়ে গরম করে নিন। কিছুক্ষণ নামিয়ে রেখে ঠান্ডা করে নিতে হবে। উপকরণটি ঠান্ডা হয়ে গেলে ভালো ভাবে ছেঁকে নিয়ে কাচের বোতলে সংরক্ষণ করুন। সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন মাথার চুলে ভালো করে মালিশ করুন এর ফলে চুল কালো ঘন ও মজবুত হবে।
ঘরোয়া পরিবেশে হেয়ার প্যাক তৈরির নিয়ম
হেয়ার প্যাক তৈরি করতে যে সমস্ত উপকরণগুলো দরকার প্রথমে আমরা সে সমস্ত উপকরণ সম্বন্ধে জানবো। এবং কিভাবে তৈরি করতে হয় চলুন আমরা জেনে নেই।
  • কালোকেশী গুড়া ২ টেবিল চামচ
  • দই এক টেবিল চামচ
  • আমলার গুঁড়ো এক টেবিল চামচ
সবগুলো উপকরণ একসাথে মিশিয়ে ভালো হবে পেস্ট তৈরি করে নিন এরপর চুলের গোড়া থেকে আগে পর্যন্ত লাগিয়ে 20 থেকে 30 মিনিট রেখে দেন এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কালোকেশী হেয়ার প্যাক ব্যবহারের ফলে চুল পড়া ও প্রাকৃতিকভাবে চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। আপনি চাইলে ঘরে বসে এ উপকরণগুলো দিয়ে কালকেশীর তেল ও হেয়ার প্যাক তৈরি করে নিজে নিজেই চুলের যত্ন নিতে পারেন। এটি ব্যবহারের ফলে আপনার চুল হবে মজবুত স্বাস্থ্য কম ও সুন্দর।
কি কি পুষ্টিগুণ ও ভেষজ বৈশিষ্ট্য রয়েছে 

কি কি পুষ্টি গুণ ও ভেষজ বৈশিষ্ট্য রয়েছে কালোকেশীতে

কালোকেশী শুধু চুলের জন্যই নয় এটা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি ভেষজ উদ্ভিদ। চুলের পাশাপাশি আমাদের মানব দেহ এই ভেষজ ওষুধের অনেক কার্যকরী ক্ষমতা রাখে। কালোকেশী কি কি উপাদান রয়েছে বিস্তারিত জেনে নেই।
  • কালোকেশীতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে যা আমাদের শরীরে চুল ও চোখের জন্য উপকারী
  • কালোকেশীতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যা আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
  • কালোকেশীতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই রয়েছে যে আমাদের চুল ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে
এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে খনিজ উপাদানও রয়েছে যেমন আয়রন,ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি যা আমাদের শরীরে রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে আর ও দাঁত মজবুত রাখে এছাড়াও ম্যাগনেসিয়াম স্নায়ুকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে।
কালোকেশী  ভেষজ কিছু বৈশিষ্ট্য
যেমন চুলের জন্য, চুল পড়া থেকে বিরত রাখে, অকালে চুল ঝরে যাওয়া ওর চুল কালো করতে সাহায্য করে, খুশকি দূর করে চুলকে করে তোলে ঘন ও মজবুত করতে সাহায্য করে। এছাড়াও ত্বকের জন্য কালোকেশীতে ভেষজ গুণের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি ব্যবহারের ফলে ত্বকে একজিমা, চুলকানি ও ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। কালোকেশীকে প্রাকৃতিক লিভার টনিক বলা হয়ে থাকে। এটি ব্যবহারের ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে ক্ষুধা বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় মাথাব্যথা ঠান্ডা কাশি ও জ্বর কমোতে ও সাহায্য করে। কালোকেশী শুধু রূপচর্চায় নয় এটি আমাদের ভেষজ চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।



















এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url